সংবিধান থেকে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বাদ দিয়ে সেখানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ চালু করার দাবিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দশ জন রাজনীতিবিদ ও আমলাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ।
আজ বুধবার (১৯ আগস্ট) সংবিধান থেকে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বাদ দেওয়ার আইনি নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তিনি এক বিজ্ঞপ্তিতে নোটিশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৪৭ সালের পর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন এবং বেআইনি কার্যকলাপের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ অন্যান্য নাগরিকরা এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ভারত, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সার্বিক সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের ১৯৭২ সালের পবিত্র সংবিধানে স্বাধীনতার চেতনাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতিসমূহ পরিবর্তন করা হয়। যা স্বাধীন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু জনগণ গ্রহণ করেনি।
এতে আরও বলা হয়, ‘পবিত্র সংবিধান ২(ক) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সহযোজন করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদটি পরিবর্তনের জন্য অশোক কুমার সাহার পক্ষে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করার জন্য একটি আইনি নোটিশ প্রেরণ করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আপাতত রিট পিটিশন দায়ের করা হবে না। ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে। তাই আপাতত আইনি নোটিশ প্রত্যাহার করা হলো।
প্রসঙ্গত, এর আগে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখার দাবিতে যাদের কাছে উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছিলো তারা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএনপি মহাসচিব, জাতীয় পার্টির মহাসচিব, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে একটি আইনি নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার সাহা এ নোটিশ পাঠান। এ নোটিশ পাওয়ার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখার দাবি জানানো হয়েছিল। অন্যথায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক জনগণের পক্ষে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছিল।